উপদেষ্টা হয়ে জমি-ফ্ল্যাটও কিনিনি কোন ব্যাংক হিসাবই ছিল না,

আগে ব্যাংক হিসাবই ছিল না, উপদেষ্টা হয়ে জমি-ফ্ল্যাটও কিনিনি: নাহিদ
অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পাওয়ার পর সম্মানী নিতে সোনালী ব্যাংকে একটি ব্যাংক হিসাব খোলার তথ্য দিয়েছেন তিনি।

 

 

বুধবার নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে দেওয়া পোস্টে নাহিদ ইসলাম তার সম্পদের হিসাব দিয়ে লিখেছেন, উপদেষ্টা হওয়ার আগে তার কোনো ব্যাংক হিসাব ছিল না।
মঙ্গলবার পদ ছাড়ার আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন নাহিদ ইসলাম।

বুধবার নাহিদের রেখে যাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় অন্তর্বর্তী সরকারে আরেক ছাত্রপ্রতিনিধি মাহফুজ আলমকে।
আর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি নিজের কাছেই রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
নাহিদ তার পোস্টে লিখেছেন, “উপদেষ্টা পদে যোগদানের আগে আমার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল না। ২১ অগাস্ট উপদেষ্টা পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্মানী গ্রহণের লক্ষ্যে সরকারিভাবে সোনালী ব্যাংকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলি। উক্ত অ্যাকাউন্টে ২১ আগস্ট ২০২৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত লেনদেনের হিসাব জনগণের কাছে উপস্থাপন করছি।”

তিনি লিখেছেন, উপদেষ্টা পদে ছয় মাস পাঁচ দিন দায়িত্ব পালনকালে সে ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ ৬ হাজার ৮৮৬ টাকা জমা এবং ৯ লাখ ৯৬ হাজার ১৮৮ টাকা উত্তোলন করেছেন। সোনালী ব্যাংকের সে হিসাব ছাড়া তার অন্য কোনো ব্যাংক হিসাব নেই বলেও তিনি তার পোস্টে তুলে ধরেন।
নাহিদ লিখেছেন, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বা তার পরিবারের কেউ কোনো সম্পদ কেনেননি।
তিনি বলেন, “উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন, আমার বা আমার পরিবারের কোনো সদস্যের (স্ত্রী/মা/বাবা) নামে বাংলাদেশের কোথাও জমি বা ফ্ল্যাট নেই বা আমার বা আমার পরিবার কর্তৃক ক্রয় করা হয়নি।”

পোস্টে তার একান্ত সচিবের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও দিয়েছে নাহিদ।
তিনি লিখেছেন, “আমার একান্ত সচিবের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এর হিসাবে ৩৬ হাজার ২৮ টাকা রয়েছে। উনি একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর উনার নিজের নামে বা উনার পরিবারের (স্ত্রী/মা/বাবা) কারো নামে বাংলাদেশের কোথাও কোনো সম্পত্তি ক্রয় করা হয়নি।”
নাহিদ লিখেছেন, তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার সম্পদের স্বচ্ছ হিসাব সংরক্ষিত রয়েছে এবং প্রয়োজনে তা উন্মুক্ত করা হবে।
তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি দপ্তরে এই তথ্য যে যাচাইযোগ্য সে কথাও তিনি তার পোস্টে স্মরণ করিয়ে দেন।

আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা জুলাই অভ্যুত্থানের মূল নেতাদের সম্মুখ সারিতে রেখে ২৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে।
৩৬ দিনের যে আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন, তার অগ্রভাবে ছিলেন নাহিদ ইসলাম। তখন তিনি ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা থেকে শুরু করে বিক্ষোভের ময়দানে দিনের পর দিন সোচ্চার নেতৃত্বে দেখা গেছে ২৬ বছরের এই তরুণকে। সেজন্য তাকে যেতে হয়েছে ‘আয়নাঘরেও’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা নাহিদের ডাক নাম ফাহিম। তার বাড়ি ঢাকার খিলগাঁও দক্ষিণ বনশ্রীতে।
দুই বছর আগে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ছিলেন নাহিদ।