
গুম ও টিএফআই সেলে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পিছিয়ে গেছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আদেশ প্রদানের জন্য আগামী মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নতুন দিন ধার্য করেছেন।
মূলত আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সময় চাওয়ায় আদালত আদেশের এই তারিখ পুনঃনির্ধারণ করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেমসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা রয়েছেন।
শুনানির শুরুতে কয়েকজন আসামির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী আদেশের জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণের আর্জি জানান। প্রসিকিউশন পক্ষ এই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, বিচারকাজ বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যে আসামিপক্ষ বারবার সময়ক্ষেপণ করছে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মন্তব্য করেন, আসামিদের আইনজীবীরা আদালতকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন। উভয়পক্ষের যুক্তি শেষে আদালত দুদিন সময় বাড়িয়ে মঙ্গলবার আদেশের দিন ঠিক করেন।
এই চাঞ্চল্যকর মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট আসামি ১৭ জন। গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা ছাড়া বাকি ৭ জন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ওর্যাবের সাবেক দুই মহাপরিচালক।
এর আগে শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম টিএফআই সেলের নির্যাতনের বীভৎসতা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৬ বছর ধরে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য ছিল অনিশ্চিত; কাউকে বছরের পর বছর আটকে রেখে পরে কারাগারে পাঠানো হতো, আবার কাউকে অজানা স্থানে ফেলে রাখা হতো। গত ৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে আদালত ১৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পলাতক আসামিদের পক্ষে বর্তমানে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা লড়ছেন।