
ইতিহাসের অভূতপূর্ব জনসংখ্যাগত পতনের মুখে রয়েছে চীন। এক্সিওসে প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, চীনের জনসংখ্যা ১শ’ ৪০ কোটি থেকে ৬৬ কোটি ২০ লাখে নেমে যাবে, যা কোনো দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হ্রাস। তবে, শুধুমাত্র চীনই নয়, ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার বহু দেশ দীর্ঘমেয়াদি জনসংখ্যা সংকোচনের দিকে যাচ্ছে, যা শ্রমবাজার, সামরিক শক্তি এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবকে নতুন আকার দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা ব্যুরোর তথ্য বলছে, এশিয়ার জনসংখ্যা ২০৫০ সালে ৫শ’ কোটিতে বিলিয়নে পৌঁছাবে, তারপর ৪শ’ ৪০ কোটিতে নামবে। আফ্রিকার জনসংখ্যা ১শ’ ৩০ কোটি থেকে ৪শ’ ৩০ কোটিতে পৌঁছাবে, যেখানে আমেরিকা ও ওশেনিয়া মহাদেশের জনসংখ্যা বর্তমান স্তরে স্থিতিশীল থাকবে। ২১০০ সালে আফ্রিকার জনসংখ্যা তরুণ অধ্যুষিত হবে, যেখানে পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপের জনসংখ্যা দ্রুত বার্ধক্য কবলিত হবে, যা বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যকে দক্ষিণ দিকে সরিয়ে দেবে।
এক্সিওসের বিশ্লেষণ দেখায় যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আফ্রিকার দেশগুলো দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হতে পারে, বা মানবিক সংকটের মুখে পড়তে পারে, যা আগামী শতাব্দীর রূপ নির্ধারণ করবে। ২০৩০ থেকে ২১০০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা অনুযায়ী আফ্রিকার ১৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যেখানে এশিয়া ৯ শতাংশ, ইউরোপ ১৬ শতাংশ ও দক্ষিণ আমেরিকা ১২ শতাংশ হ্রাস পাবে এবং উত্তর আমেরিকা প্রধানত অভিবাসনের কারণে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইউক্রেন, ইতালি ও স্পেন বার্ধক্য ও কম জন্মহারজনিত জনসংখ্যাগত সংকটে পড়বে। দ্রুত বর্ধনশীল আফ্রিকা বিশ্বের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষম জনসংখ্যা, ভোক্তা, ধর্মীয় সম্প্রদায় ও নগর কেন্দ্র সরবরাহ করবে। অন্যদিকে ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার সংকুচিত জনসংখ্যা সামরিক শক্তি, অর্থনৈতিক উৎপাদন সীমিত করবে এবং অভিবাসীদের জন্য প্রতিযোগিতা বাড়াবে, এমনকি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ও এআই সম্প্রসারণ ঘটাবে।
একদিকে যেমন লাগোস, কিনশাসা ও দার এস সালামসহ আফ্রিকার মহানগরগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি, বাণিজ্য ও উদ্ভাবনের কেন্দ্র হতে পারে বা মানবিক সংকটের কারণে অস্থিতিশীলতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে, অন্যদিকে, বার্ধক্যপ্রবণ অর্থনীতি অভিবাসীদের আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা তীব্র করবে, যা বিশ্বব্যাপী দক্ষতার প্রতিযোগিতার পথ সুগম করবে।





