আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে হাজির হাসনাত আবদুল্লাহ

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলমান। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হন। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডে প্রাসঙ্গিক তথ্য উপস্থাপন করবেন।

ট্রাইব্যুনাল-২ এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল, যার চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, আজকের সাক্ষ্য গ্রহণে উপস্থিত ছিলেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এই মামলায় মোট ৩০ আসামি রয়েছে, এর মধ্যে ছয়জন বর্তমানে গ্রেপ্তার।

গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। আজ সকালে কারাগার থেকে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

মামলার আগে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় গত ২৮ আগস্ট, আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ও সাংবাদিক মঈনুল হকের সাক্ষ্য দিয়ে। এরপর ৬ অক্টোবর পুলিশ কর্মকর্তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে ১০ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ছাত্র ও পুলিশসহ বিভিন্ন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।

সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন বেরোবির শিক্ষার্থী শান-এ রওনক বসুনিয়া, আকিব রেজা খান, ইমরান আহমেদ, মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক, পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম, রংপুর কোতোয়ালি জোনের এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম। তারা হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষ ও প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করেছেন।

এর আগে, ২৪ জন পলাতক আসামি এখনও বিচারাধীন। তাদের পক্ষে চারজন সরকারি আইনজীবী নিয়োগ পেয়েছেন। এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ৬ আগস্ট গঠন করা হয়। মামলার মোট সাক্ষীর সংখ্যা বর্তমানে ৬২ জন।

এই মামলায় ট্রাইব্যুনাল ধারাবাহিকভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা করছে, যাতে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পুরো বিষয়টি স্পষ্টভাবে আদালতের সামনে উপস্থাপন করা যায়। আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান থাকায় বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শেষ হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, যা দেশের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।