ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ছয় সপ্তাহ পরও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। একই সময়ে, একটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে আরেকজন বন্দীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বানি সুহেইলার এক ফিলিস্তিনি, যাকে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনাস্থল ‘ইয়েলো লাইন’-এর বাইরে অবস্থিত, যা ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকা। অন্যদিকে, গাজা সিটির উত্তর অংশে ইসরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ বিস্ফোরিত হলে একজন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক তরিক আবু আজযুম জানান, দিনের বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত ছিল। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় অঞ্চলে আর্টিলারি হামলা, বিমান হামলা এবং হেলিকপ্টার হামলার খবর পাওয়া গেছে। বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি গোলাগুলি ‘ইয়েলো লাইন’-এর বাইরের এলাকায় আঘাত হানে। দক্ষিণে রাফাহের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ও খান ইউনিসের উপকণ্ঠে ট্যাংক ও হেলিকপ্টার হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার মাঝামাঝি অঞ্চলে সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ ও রেড ক্রসের সহায়তায় মাগাজি শিবিরের ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি পরিবারের আট সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বাড়িটি পূর্বের এক ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছিল। গাজা গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে উদ্ধার করা মৃতদেহের সংখ্যা এখন ৫৮২-তে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বোমা বিধ্বস্ত এলাকাগুলোর ধ্বংসাবশেষের নিচে এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৯ হাজার ৫০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি।
এই হামলার কারণে গাজার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও জীবনযাত্রার পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটাপন্ন হচ্ছে। শিশু, নারী ও বয়স্কদের ওপর হামলার প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে। তারা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জোর দিয়েছে, যাতে গাজার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, চলমান হামলা ও বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে উদ্ধার কার্যক্রমের ধীরগতি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।