টাইটানিক দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীর স্বর্ণের ঘড়ি নিলামে সাড়ে ২৮ কোটি টাকায় বিক্রি

টাইটানিক দুর্ঘটনায় নিহত ইসিডর স্ট্রাউসের মৃতদেহ থেকে উদ্ধার করা একটি স্বর্ণের পকেট ঘড়ি নিলামে রেকর্ড ১৭ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ২৮ কোটি টাকা) দামে বিক্রি হয়েছে। ইসিডর স্ট্রাউস ছিলেন টাইটানিকের সবচেয়ে ধনী যাত্রীদের একজন। তার সঙ্গে নিহত হন স্ত্রী আইডা স্ট্রাউসও।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কয়েক দিন পর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ইসিডরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের সঙ্গে পাওয়া যায় একটি ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের জুলেস জারগেনসেন পকেট ঘড়ি, যা স্ট্রাউস দম্পতির পরিবার চার প্রজন্ম ধরে সংরক্ষণে রেখেছিল। শনিবার ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের ডিভাইজেস শহরের হেনরি অলড্রিজ অ্যান্ড সন নিলাম ঘরে ঘড়িটি বিক্রি হয়।

জার্মানিতে জন্ম নেওয়া ইসিডর স্ট্রাউস ছিলেন একজন মার্কিন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং নিউইয়র্কের বিখ্যাত মেসিজ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সহ-মালিক। টাইটানিক ডুবির রাতে তার স্ত্রী আইডাকে লাইফবোটে ওঠার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু আইডা স্বামীর পাশে থাকতে অস্বীকার করেন। স্ট্রাউস দম্পতির এই দায়িত্ববোধ এবং প্রেমের গল্পকে ইতিহাসে ‘চূড়ান্ত প্রেমের গল্প’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আইডার মৃতদেহ উদ্ধার করা যায়নি।

এ ছাড়াও, নিলামে টাইটানিকের অন্যান্য স্মারকও বিক্রি হয়েছে। আইডা স্ট্রাউসের টাইটানিক লেটারহেডে লেখা একটি চিঠি বিক্রি হয়েছে ১ লাখ পাউন্ডে। জাহাজে থাকা যাত্রী তালিকা বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার পাউন্ডে। আর আরএমএস কারপাথিয়ার নাবিকদের দেওয়া একটি স্বর্ণপদক বিক্রি হয়েছে ৮৬ হাজার পাউন্ডে। মোট মিলিয়ে টাইটানিক–সংক্রান্ত বিভিন্ন স্মারকের নিলামে প্রায় ৩০ লাখ পাউন্ড উঠেছে।

নিলামকারী অ্যান্ড্রু অলড্রিজ বলেন, “ঘড়িটির রেকর্ডমূল্য টাইটানিক নিয়ে মানুষের দীর্ঘস্থায়ী আগ্রহের প্রমাণ। প্রতিটি যাত্রী ও নাবিকের নিজস্ব গল্প ছিল, আর ১১৩ বছর পরও সেই গল্পগুলো স্মারকের মাধ্যমে বলা হয়ে থাকে।” তিনি আরও বলেন, “স্ট্রাউস দম্পতি ছিলেন টাইটানিকের ‘চূড়ান্ত প্রেমের গল্প’। ৪১ বছরের দাম্পত্যের পরও আইডা যে স্বামীকে ছেড়ে যেতে চাননি ঘড়ির এই রেকর্ডমূল্য সেই সম্মানেরই প্রতিফলন।