
বান্দরবানে জমি বিরোধের জেরে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ
মো: আলী- বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :
বান্দরবান লামা থানাধীন ০৬নং রূপনী পাড়া ইউপির ০৫নং ওয়ার্ডস্থ মুসলিম পাড়া এলাকায় জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
বাদী মোঃ নুর হোসেন (৭০), পিতা- আব্দুর রশীদ, সাং- তারাবুনিয়া পাড়া, ২৮৯নং চৈক্ষ্যং মৌজা, উপজেলা- আলীকদম, বান্দরবান পার্বত্য জেলা। স্থায়ী সাং- মুসলিম পাড়া, ০৫নং ওয়ার্ড, ০৬নং রূপসী পাড়া ইউপি, ২৯৪নং দরদরী মৌজা, উপজেলা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
আসামীগণ।১। বাদশা মিয়া (৩২), ২। রাজা মিয়া (২৮), উভয় পিতা- আনোয়ার হোসেন, ৩। আনোয়ার হোসেন (৫২), গিতা- আব্দুর রশিদ, ৪। ওয়াজকুরুনী (১৯), পিতা- আনোয়ার হোসেন, ৫। রহিমা খাতুন (৪৫), স্বামী- আনোয়ার হোসেন, সর্ব সাং- মুসলিম পাড়া, ০৫নং ওয়ার্ড, ০৬নং রূপনী পাড়া ইউপি, ২৯৪নং দরদরী মৌজা, উপজেলা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা সহ আমার নাথা আরও ৩/৪ জন। ঘটনার তারিখ ও সময় ৪ ১৩/০৬/২০২৫ ইং তারিখ, সকাল অনুমান ৬:০০ ঘটিকা হইতে ৯০০০ ঘটিকা পর্যন্ত। ঘটনাস্থল। লামা থানাধীন ০৬নং রূপনী পাড়া ইউপির ০৫নং ওয়ার্ডস্থ মুসলিম পাড়া এলাকায় গর্জন গাছের নিচে চলাচল রাস্তায়।
বাদী প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আসামীগণ আমার জায়গা জবর দখল করার অপচেষ্টা করে অনর্থক আমার সাথে ঝগড়া বিবাদ করায় আমি কোন উপায় খুজে না পেয়ে জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করি। উক্ত মামলা দায়ের এরপর আসামীগণ আরও বেপরোয়া হয়ে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণে হত্যা করার বার বার হুমকি দিয়ে আসছে।
গত ১২/০৬/২০২৫ইং তারিখ সন্ধ্যায় আমার ছেলে-আবু বকর (২৭) ঈদ উপলক্ষ্যে আমার পিতার বাড়িতে বেড়াতে যায়। অতঃপর ঘটনার দিন তারিখ ও সময়ে অর্থ্যাৎ ১৩/০৬/২০২৫ইং তারিখ, সকাল অনুমান ৬টায় আমার ছেলে আবু বকর ঘুম থেকে উঠে পুকুরে হাত-মুখ ধুতে গেলে আসামী বাদশা মিয়া ও রাজা মিয়া
আসিয়া আমার ছেলে আবু বকর কে বাঁধা প্রদান করে বলতে থাকে যে, তুই বা তোর পরিবারের কেহ এই পুকুরে আসতে পারবি না। তখন আমার ছেলে তাহাদের কথায় প্রতিবাদ করা মাত্রই বাদশা মিয়া ও রাজা মিয়া ক্ষিপ্ত হইয়া আমার ছেলে কে হত্যার উদ্দেশ্যে তাড়া করিলে সে কোন উপায় খুজে না পেয়ে প্রতিবেশী আব্দু ছাত্তার এর বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
সকল আসামীগণ পরস্পর যোগসাজসে একই উদ্দেশ্য সাধনকল্পে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া যথাক্রমে ধারালো দা, লোহার রড, লোহার হাতুড়ি, লাঠিসোটা ইত্যাদি নিয়ে আব্দু ছাত্তার এর বাড়ির চারিপাশ ঘেরাও করে অশ্লীল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ঘর হইতে বের হতে বলে। অতঃপর সকাল সাড়ে ৮টায় হয়ে যাওয়ার পরও আসামীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ না করায় চারিপাশ হইতে লোকজন জড়ো হওয়া শুরু করে। খবর পেয়ে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন করার জন্য গ্রাম পুলিশ মোফাজ্জেল হোসেন ঘটনাস্থলে আসিয়া স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ব্যবহৃত কাপড় চোপড়, টাকা পয়সা নিয়ে আমার ছেলে আবু বকর,ও ইশান আকন (১৬) কে নিয়ে চলে আসতে থাকে।
কিন্তু আসামীগণ পরিকল্পিত ভাবে ঘটনাস্থলের নির্জন জায়গায় সকাল আনুমানিক ৯টায় চলাচল রাস্তার উপর আমার ছেলে আবু বকর,ও ইশান আকন’সহ গ্রাম পুলিশ মোফাজ্জেল হোসেন এর পথ আটকিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে।
১নং আসামী অতর্কিত ভাবে আবু বকরের নাকের উপর সজোরে ঘুষি মারে। এতে করে তাহার নাক হইতে রক্ত বের হতে থাকে। সাথে সাথে তাহাকে উদ্ধার করতে গ্রাম পুলিশ ও ইশান আকন আগাইয়া গেলে ৪ ও ৫নং আসামী সহ অজ্ঞাত নামা আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাত নামা আসামীগণ তাহাদের মারধর করে শরীরের বিভিন্ন অংশে নিলাফুলা জখম করে। ২নং আসামীর হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়ে আবু বকর এর সর্বাঙ্গে বারি মেরে এবং ৩নং আসামী বিল, মুষি, লাথি মেরে মারাত্মক থেতলানো নিলাফুলা জখম করে। একপর্যায়ে ১নং আসামী আবু বকর এর পাঞ্জাবির পকেটে রক্ষিত নগদ ৩৩,০০০/- টাকা এবং ৩নং আসামী ভিকটিম ১ এর ব্যবহৃত ভিভো ব্যান্ডের ২৯,০০০/- টাকা মূল্যের একটি স্মার্ট ফোন জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং কাপড় চোপড় ছিড়ে ফেলে।
অতঃপর আবু বকর ও ইশান আকন কে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে টানা-হেচড়া করে অজ্ঞাত নামা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আবু বকর ও ইশান আকন এর আত্মচিৎকার করিলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আগাইয়া আসিলে সকল আসামীগণ হুমকি দিয়ে বলে যে,”ঘটনার বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করিলে কিংবা মামলা মোকদ্দমা করিলে তোকে সহ তোর পরিবারের লোকজনকে প্রাণে হত্যা করিয়া মাটি চাপা দিব, মিথ্যা মামলায় জড়াইয়া হয়রানী করিব, ঘরবাড়ি আগুন দিয়া জ্বালাইয়া দিব” মর্মে মারাত্মক প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল হতে পালিয়া যায়।
সকলের সহযোগিতায় আবু বকর ও ইশান আকন কে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করিয়া লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসা করায়। আবু বকর শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাহাকে কক্সবাজার হাসপাতালে রেফার করা হয়। এমতাবস্থায় উক্ত ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণকে অবগত করে লামা থানায় এজাহার দায়ের করা হয়।
এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী, মানবাধিকার সংগঠন, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, সর্বপরী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এই ঘটনার সঠিকভাবে বিচার করা হলে মানুষ আইনের প্রতি আরো বেশি শ্রদ্ধাশীল হবে।