ফিরিঙ্গি বাজারে হোটেল ব্রিজের আড়ালে রমরমা দেহ ব্যবসা
কোতোয়ালি থানার অভিযানে ৫ গ্রেফতার

ফিরিঙ্গি বাজারে হোটেল ব্রিজের আড়ালে রমরমা দেহ ব্যবসা, ম্যানেজারের দাবি:

পুলিশ-সাংবাদিক ম্যানেজ করেই চলে ব্যবসা!”

কোতোয়ালি থানার অভিযানে ৫ গ্রেফতার

এবাদুল হোসেন:

চট্টগ্রাম, ১১ জুন ২০২৫ দৈনিক24সংবাদ টিমে অনুসন্ধানে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা এলাকার ফিরিঙ্গি বাজারে অবস্থিত *হোটেল ব্রিজ আবাসিক*-এর আড়ালে সংঘটিত হচ্ছে নারী দেহ ব্যবসার ঘৃণ্য কার্যক্রম। হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা স্থানীয় পুলিশ ও প্রভাবশালী সাংবাদিকদের “ম্যানেজ” করে এই অবৈধ ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালাচ্ছেন। তবে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পুলিশের তাৎক্ষণিক অভিযানে হোটেল ম্যানেজারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দৈনিক 24সংবাদ এর অনুসন্ধানী টিম গতকাল হোটেলটিতে গোপনে প্রবেশ করে। হোটেল ম্যানেজার বাবুলের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি নিশ্চয়তা দেন, “আমাদের এখানে কোনো সমস্যা নেই। পুলিশ ও বড় বড় সাংবাদিক ম্যানেজ করেই ব্যবসা চালাই। ছোটখাটো কোনো সাংবাদিক এলে তাকে বেঁধে রাখি। আপনি নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারবেন। এখানকার দেহব্যবসা ১১০% নিরাপদ!”

পরবর্তীতে টিমের সদস্যরা যৌনকর্মী দেখতে চাইলে হোটেল কর্তৃপক্ষ এক তরুণীকে হাজির করে এবং সারারাত থাকার জন্য ৩,৫০০ টাকা দাবি করে। কথোপকথন ও প্রমাণ সংগ্রহ শেষে টিম কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলে তার নির্দেশে হোটেলটিতে অভিযান চালানো হয়।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার (ওসি) জানান, *হোটেল ব্রিজ আবাসিক*-এ অবৈধ দেহব্যবসা ও নারী পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় হোটেল ম্যানেজারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওসি বলেন, **”অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের শূন্য সহনশীলতা। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।”**

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফিরিঙ্গি বাজারের এই হোটেলটি দীর্ঘদিন ধরে “আবাসিক” নামে পরিচালিত হলেও আসলে এটি যৌনকর্মীদের একটি কেন্দ্র। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের অর্থ দিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে। পুলিশের অভিযানের পর হোটেলটি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও এর নেপথ্যের চক্রান্ত উন্মোচনে তদন্ত চলছে।

মানবাধিকার সংগঠন *নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম*-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক সেলিনা হক বলেন, **”শহরের ব্যস্ততম বাজারে এভাবে দেহব্যবসা চালানো মানে প্রশাসনের চোখের সামনেই অবৈধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। এর পেছনে কারা জড়িত, তা তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”**

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ও পতিতাবৃত্তি সংক্রান্ত আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় হোটেলের মালিকানাসহ জড়িত উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের তদন্তের আওতায় আনার কথাও জানানো হয়েছে।