জমি উদ্ধারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা,, ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম মুক্তিযোদ্ধা দলের, আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি,

মীরসরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জমি উদ্ধারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা,,
৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম মুক্তিযোদ্ধা দলের, আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি,,

এম অলিউল্লাহ নিজামী,,

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার মুহুরী প্রকল্প এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে এই সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি ভূমিদস্যুদের দখলমুক্ত করার দাবিতে জোরালো ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়।

পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর একে একে বক্তারা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাঁর শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য মীরসরাইয়ের মুহুরী প্রকল্প এলাকায় ৩০০ একর জমি বরাদ্দ দেন। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও সেই জমির মালিকানা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। বরং একটি প্রভাবশালী চক্র তা দখল করে রেখেছে।

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, এরশাদ সরকারের পতনের পরেও কিছু অসাধু ব্যক্তি ও ভূমিদস্যু গোষ্ঠী সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে সেই জমির উপর নিজেদের দখল কায়েম রেখেছে। অথচ এসব জমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য ছিল। এই অবিচারের বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার্থে অবিলম্বে জমি দখলমুক্ত করে প্রকৃত হকদারদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

মুক্তিযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে সভায় জানানো হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষ যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে মুক্তিযোদ্ধা দল আইনি প্রক্রিয়ায় এবং প্রয়োজনে রাজপথে নেমে আন্দোলন করবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক ফজলুল হক মাস্টার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মীরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সানা উল্যাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লিয়াকত আলী খান।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মীরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের সভাপতি জনাব শামসুদ্দিন খোকন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদের জন্য নির্ধারিত জমি আজ কিছু দখলবাজের হাতে বন্দি। এটি শুধু দুঃখজনক নয়, জাতির জন্য লজ্জাজনকও।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সদস্যরা, যাদের মধ্যে ছিলেন রবিউল হোসেন, বদিউল আলম, নুরুল আবছার, আবুল কালাম, মুছা মিয়া, আলা উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, মাহবুব আলম, রফিকুল ইসলাম, শেখ ফরিদ গাজী প্রমুখ।

বক্তারা সর্বসম্মতিক্রমে জমি উদ্ধারে আন্দোলন জোরদার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং আগামী দিনের কর্মসূচি নির্ধারণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।