দয়াগঞ্জে পুলিশ সদস্য হত্যার পেছনে পরকীয়া! স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ২
সাকিব হোসেন পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর দয়াগঞ্জের একটি পাঁচতলা ভবনের তৃতীয় তলায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন হুমায়ুন কবির (৪৫)। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। নিহত হুমায়ুন কবির ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যানবাহন শাখায় কর্মরত ছিলেন। পুলিশ জলকামান চালাতেন তিনি।
গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে দয়াগঞ্জের নিজ বাসার গেটের সাথে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠায় পুলিশ। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) ভোর রাতে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল সাড়ে ৮টায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, হুমায়ুন কবিরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে৷ এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই খোকন হাওলাদার।
ঘটনার পরে নিহত পুলিশ সদস্য খোকনের স্ত্রী সালমা বেগম ও ভাই আল মামুনের স্ত্রীর বোন পলি আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক রয়েছেন মূল আসামি ও নিহত হুমায়ুনে স্ত্রী সালমার পরকীয়া প্রেমিক রাজীব আল হাসান। প্রধান আসামি রাজিব সম্পর্কে নিহতের বেয়াই হতেন। নিহতের ভাই আল মামুনের স্ত্রীর আপন এই রাজীব।
স্বজনদের অভিযোগ, সালমা বেগমের সাথে রাজীবের প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে হুমায়ুনের পরিবারে অশান্তি চলছিলো। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছিলো। এই প্রেমের সম্পর্কের জের ধরেই রাজীব আল হাসান, তার বোন পলি আক্তার ও নিহত হুমায়ুনের স্ত্রী সালমা পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত হুমায়ুন কবির অত্যন্ত শান্ত স্বভাবেক ভদ্র একজন মানুষ ছিলেন। একদিকে তার হত্যাকাণ্ড। অন্যদিকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেফতার। এমন ঘটনায় নির্বাক তাদের ১৩ বছর ও ৭ বছর বয়সী দুই শিশু সন্তান। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারসহ জড়িতদের ফাঁসি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
যাত্রাবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, হুমায়ুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ মৃত্যু পরে ঘটনার সাথে জড়িত স্ত্রী সালমাসহ মামলার দুজনকে গ্রেফতার হয়েছেন। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।