সন্দ্বীপ ফেরি সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, সন্দ্বীপবাসী উৎসবের বন্যা

 

সীতাকুণ্ড বাঁশবাড়িয়া -সন্দ্বীপ ফেরি সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, সন্দ্বীপবাসী উৎসবের বন্যা

কাইয়ুম চৌধুরী,সীতাকুণ্ডঃ
সন্ধীপবাসীর যাতায়াতে ছিল জীবন জুকি,হয়রানী,সকল
প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তচড়া ঘাটে নৌপথে ফেরি চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সকল জুকি,হয়রানীর অবসান ঘটেছে।
আজ সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৯ টায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এ ফেরি চলাচলের উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড.এম সাখাওয়াত হোসেন।
উদ্বোধনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন,বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়,সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান,পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান,মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা – ফারুক-ই-আজম,প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা.বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার।
উদ্বোধন পরবর্তীতে অন্তবর্তী সরকারের ৬ উপদেষ্টা সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে কপোতাক্ষ নামক ফেরিটি সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে নৌপথে গুপ্তচড়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। উদ্বোধন পরবর্তীতে ফেরি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যখন ছেড়ে যায় তখন সন্দ্বীপগামী উৎসুক জনতা আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন। এ সময় উপস্হিতদের করতালিতে পুরো ফেরিঘাট এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
এদিকে বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরিটি সোয়া এক ঘন্টায় উপদেষ্টা সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে সন্দ্বীপের গুপ্তচড়া ঘাটে পৌছে।। সেখানে পৌঁছে উপদেষ্টারা ঢাকা- সন্দ্বীপ রুটে বিআরটিসি বাস চলাচলের উদ্বোধন করেন। এছাড়া সোমবার দুপুরের পর সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজিত সমাবেশে আগত উপদেষ্টাগনের উপস্থিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাস্মদ ইউনুস।
আনন্দে আত্মহারা সন্দ্বীপের বাসিন্দারা জানান,সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে তাদের প্রতিনিয়ত বিপদের মুখোমুখি হতে হত। তাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ছিল ফেরি সার্ভিস চালুর। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ফেরি চলাচল চালুর মাধ্যমে চার লাখ সন্দ্বীপবাসীর কপাল খুলেছে। এখন অনেকটাই নির্বিঘ্নে নৌপথে যাতায়াত করতে পারবেন তারা। মানুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্নে সন্দ্বীপ পৌঁছাবে বাস,ট্রাক,ট্যাঙ্ক, লরি,মিনি বাস প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেল সহ ধরনের যানবাহন। এতে সন্দ্বীপবাসীর জীবন যাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি ক্রমান্বয়েই বাড়বে অর্থনৈতিক সক্ষমতা। সেই সাথে বাড়বে সন্দ্বীপে পর্যটক ও দর্শনার্থীর আগমন। ইতিমৎ্যেে বেশ কয়টি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে নগরীর হালশহর থেকে।
ফেরি কপোতাক্ষের মাস্টার মো.শামসুল আলম প্রতিনিধি কে জানান,ফেরিতে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৩৫ টি যানবাহন উঠতে পারবে। পাশাপাশি ৬০০ জন মানুষও উঠতে পারবে। ফেরি পারাপারে সাধারণ যাত্রীদের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। এছাড়া মোটরসাইকেল ২০০ টাকা,সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ৫০০ টাকা,ব্যক্তিগত গাড়ি ৯০০ টাকা,বাস ৩ হাজার ৩০০ টাকা,ট্রাক ৩ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ১০ চাকার গাড়ির ভাড়া ৭ হাজার ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রতিনিধি কে বলেন,জোয়ার-ভাটা হিসেব করে প্রতিদিন যাওয়া-আসা মিলিয়ে চারবার ফেরি চলাচল করবে। এতে বাঁশবাড়িয়া ঘাট থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তচড়া ঘাটে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা ১০ মিনিট।
প্রসঙ্গত,ঢাকা থেকে সন্দ্বীপ বিআরটিসি’র বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের এয়ারপোর্ট, সিবিচ, নিমতলা, নয়াবাজার কুমিরা বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট-সন্দীপ এনাম নাহার মোড় রুটেও আজ থেকে এসি বাস সার্ভিস চালু করেছে বিআরটিসি। এখন থেকে হালিশহর,অলংকার থেকে সরাসরি বাসে করে সন্ধীপ যেতে পারবেন সন্ধীপবাসিরা।